স্থিতিশীল উন্নয়ন
১) স্থিতিশীল উন্নয়ন সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টিকা লেখ।
২) স্থিতিশীল উন্নয়ন কাকে বলে? এর প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
৩) টেকসই উন্নয়ন সম্পর্কে যা জানো লেখো।
ভূমিকাঃ
স্থিতিশীল
উন্নয়ন বা টেকসই উন্নয়ন হল পরিবেশ ও সম্পদের মধ্যে সমন্বয় সাধনকারী একটি আধুনিক ধারণা। স্থিতিশীল
উন্নয়নকে অর্থনীতি, সমাজবিদ্যা,
পরিবেশবিদ্যা,
ভূগোল
প্রভৃতি জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার দৃষ্টিকোণ থেকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করা
যায়। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু
পরিবর্তন এবং পরিবেশগত অবনমনের হাত থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে টেকসই
উন্নয়ন
ধারনার বিকাশ ঘটে।
স্থিতিশীল উন্নয়নের সংজ্ঞাঃ
যেসব উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড
বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর
ক্ষেত্রে কোনো বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেইসব পরিকল্পিত উন্নয়নই হল টেকসই উন্নয়ন বা Sustainable Development।
টেকসই উন্নয়ন শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত
হয় ১৯৮৭ সালে ব্রুন্ডল্যান্ড কমিসনে। ব্রুন্ডল্যান্ড
কমিশনের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিজস্ব
চাহিদা মেটানোর ক্ষমতাকে বজায় রেখে বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটানোকেই টেকসই বা স্থিতিশীল উন্নয়ন বলে।
অ্যালেন এর মতে, স্থিতিশীল
উন্নয়ন হচ্ছে মানুষের জীবনের গুণগত মানের এবং মানুষের চাহিদার স্থায়ী সন্তুষ্টি
অর্জনের ব্যবস্থা করা।
ডেভিড মার্নো এর মতে, স্থিতিশীল
উন্নয়ন মানে কোনো লক্ষ্য পূরণ নয়, এটি হন দীর্ঘস্থায়ী এক প্রক্রিয়া
এবং এক ধরনের মানদণ্ড, যার মাধ্যমে মানুষের আচার-ব্যবহার ও
কর্মকান্ডের বিচার বিবেচনা করা যায়।
সুতরং টেকসই উন্নয়ন
কেবলমাত্র পরিবেশ সংরক্ষণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নই নয়; বরং সামাজিক
এবং মানবিক উন্নয়নও এর আওতাভুক্ত।
স্থিতিশীল উন্নয়নের প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্যঃ
স্থিতিশীল উন্নয়নের উপরিউক্ত সংজ্ঞার
পরিপ্রেক্ষিতে এর নিম্নলিখিত প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা যেতে পারে। যেমন-
১)
ধারাবাহিক বা নিরবিচ্ছিন্ন পদ্ধতিঃ
স্থিতিশীল উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক বা নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি। টেকসই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বর্তমানের উন্নয়ন, ভবিষ্যতের উন্নয়নে বাধা না হয়ে বরং তা ভবিষ্যতের উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। টেকসই উন্নয়নের মূল লক্ষ্য হল সমস্ত মানুষের জীবনযাত্রার গুণগত মানের নিরবিচ্ছিন্ন অগ্রগতি।
২) দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতিঃ
স্থিতিশীল উন্নয়নের মাধ্যমে শুধুমাত্র বর্তমান
প্রজন্মের প্রয়োজন মেটে না, সেই সাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর মতো সংস্থানও
থেকে যায়। অর্থাৎ এটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। এর ফলাফল দীর্ঘস্থায়ী হয়,
যা টিকিয়ে রাখা যায় কয়েক প্রজন্ম ধরে। পরিবেশের গুণগত মানকে
সুরক্ষিত রেখে মানুষের জীবনযাত্রার স্থায়ী উন্নয়ন করা এর প্রধান লক্ষ্য।
৩)
ত্রিমাত্রিক পদ্ধতিঃ
স্থিতিশীল উন্নয়ন হল একটি ত্রিমাত্রিক পদ্ধতি। এর প্রধান তিনটি মাত্রা বা স্তর হল- সমাজ, অর্থনীতি ও পরিবেশ। অর্থাৎ টেকসই উন্নয়নে অর্থনৈতিক বিষয়াদি ছাড়াও সকল সামাজিক ও বাস্তুতান্ত্রিক বিষয়ের উপর দৃষ্টি দেওয়া হয়।
৪) সামাজিক ন্যায়বিচারের
সহায়কঃ
টেকসই উন্নয়ন সামাজিক
ন্যায়বিচারের সহায়ক। টেকসই উন্নয়ন পৃথিবীর সমস্ত গরিব মানুষের চাহিদা পূরণের দিকে
বেশি নজর রাখে। এটি গরিব মানুষের সামাজিক সাম্য, সামাজিক সুবিচার ও
নিরাপত্তাবিধানের উপর জোর দেয়।
৫) বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতিঃ
টেকসই উন্নয়ন হল একটি বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। টেকসই উন্নয়ন সম্পদের পরিকল্পনামাফিক ও বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনার উপর জোড় দেয় এবং এর মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদের গুণমান ও কার্যকারিতা বজায় রেখেও সর্বাধিক অর্থনেতিক সুবিধা আদায় করার কথা বলে।
স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস
পেতে চাইলে
সরাসরি যোগাযোগ করো
8967181871
এই নম্বরে
বিশেষ দ্রষ্টব্য
টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়
এবং
ডিজিটাল মাধ্যমে অনলাইন/ অফলাইন
ক্লাসেরও সুব্যবস্থা আছে
0 মন্তব্যসমূহ